তাহারেই পড়ে মনে কবিতার মূলভাব এবং ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ

তাহারেই পড়ে মনে কবিতার ব্যাখ্যা এবং মূলভাব বিশ্লেষন

0
(0)

আসসালামু আলাইকুম,  দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রথম পত্র বইয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি কবিতার নাম হচ্ছে তাহারি পড়ে মনে। এই কারণে আজকের পোস্টে আমরা আপনাদের সাথে তাহারেই পরে মনে কবিতার ব্যাখ্যা এবং তাহারেই পরে মনে কবিতার মূলভাব সুন্দরভাবে বোঝানোর চেষ্টা করব।

দ্বাদশ শ্রেণীর বিভিন্ন পরীক্ষায় এই তাহারেই পরে মনে কবিতা থেকে প্রশ্ন আসতে দেখা যায়। কবিতাটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ রয়েছে পরীক্ষায় আসার জন্য।

তো যদি আপনারা এই তাহারেই পড়ে মনে কবিতার ব্যাখ্যা এবং তাহারেই পরে মনে কবিতার মূলভাব সহ তাহারেই পরে মনে কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তরগুলো জানতে চান তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতার ব্যাখ্যা

কোন কবিতা থেকে প্রশ্ন আসলে সেগুলো সঠিকভাবে উত্তর দেওয়ার জন্য অবশ্যই সেই কবিতার ব্যাখ্যা গুলো ভালোমতো বুঝতে হয় । শুধুমাত্র কবিতা মুখস্ত করলে সেখান থেকে সঠিকভাবে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব হয় না।

তো তাহারেই পরে মনে কবিতা থেকে সৃজনশীল কিংবা নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য নিচে থেকে তাহারেই পরে মনে কবিতার ব্যাখ্যা টি ভালোভাবে বুঝে পড়ুন তাহলে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারবেন।

ব্যাখ্যাঃ প্রথমে এখানে কবি ভক্ত কবিকে হে কবি বলে ডেকেছে এবং এটা জানিয়ে দিয়েছে যে এই পৃথিবীতে ফাগুন বা বসন্তকাল এসেছে তারপরেও কবি নীরব কেন। নিরব মানে কবি এখনো কোনো গান কবিতা কিংবা কোন কিছু রচনা করছে না কেন।

আবারো কবি কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে তুমি কি তোমার বসন্তের গানগুলো রকনা করে এবং প্রশংসা করে এই বসন্তকে বরণ করে নেবে না?

এরপর কবি তার সেই কমল এবং উৎসুক দৃষ্টি খুলে এটা বলল যে বসন্তের সেই দক্ষিণা বাতাস গুলো আবার বইতে শুরু করছে কিনা। কবি যে এই বিষয়টা ভালোভাবে অনুভব করেননি সেটা তার এই চরন থেকেই বোঝা যায়।

পরের চরণগুলিতে কবি যে সমস্ত বিষয় জিজ্ঞাসা করেছে সবগুলোই কবির উদাসীনতা মনোভাবকে স্পষ্টভাবে ফুটে তুলেছে। বাতাবি লেবুর ফুল ফুটেছে কিনা এছাড়াও আমের মুকুল গুলো এসেছে কিনা এগুলো কবি জানতে চেয়েছিলেন।

পড়ুনঃ লালসালু উপন্যাসের চরিত্রসমূহ বিশ্লেষণ (সহজ ভাষায়)

আবার কবি ভক্ত কবি কে জিজ্ঞাসা করেছে যে এগুলো কি তুমি এখনো দেখনি। বসন্ত আসলেই কবি তার ঘর এবং নিজেকে ফুল দিয়ে সাজিয়ে তুলতেন। কিন্তু এবার বসন্ত আসার পরেও কবি এসকল কিছুই করেননি। এই সবকিছুই কবিভক্ত কবি কে জিজ্ঞেস করতেছিলেন।

আবার কবি অন্যদিকে দেখে কবি ভক্তের কাছে জানতে চাইলেন যে নৌকা কি এসেছে আবার আগমনী গানগুলোকে বেজেছে? কবি এটাও জিজ্ঞেস করেছে যে সেগুলো কি তাকে দেখেছে এই খবরগুলো কবি নিজেও মনে রাখে নাই এবং কানেও শুনে নেই ।

আবারো কবি ভক্ত তাকে ও কবি বলে ডাকলেন এবং বললেন যে আবার আপনার গানগুলো রচনা করেন। আপনার কাছে এটা আমার মিনতি যে বসন্তের গানগুলো আবার আপনার কন্ঠে শুনব।

আবারো কবি অনেক নরম কন্ঠে তাকে বললেন যে এবার না হয় নাই হোক ।   কবি ফাল্গুনের স্মরণে গানগুলো রচনা করলেও তিনি বসন্তের জন্য অপেক্ষা করেননি।

আবারো কবি ভক্ত কবি কে বললেন ওগো কবি আপনি কি আবারো অভিমান করেছেন । যদিও আবার বসন্ত এসেছে কিন্তু কবির এগুলো বৃথায় রয়ে গেল।

কবি আবার অনেক অবহেলার সাথে বললেন যে, বৃথা হয়নি ফাগুনের বেলায় তো করেছি। কবি এর সাথে এটাও জিজ্ঞাসা করেছেন যে ফুল কি আবার ঘটেনি। ঋতুর রাজা বসন্ত এই পুষ্পরীতিতে কি ভরে ওঠেনি।

কবিভক্ত আবারো বললেন হোক তবুও এই বসন্তের প্রতি আপনার কেন এত অবহেলা ?  অর্থাৎ কবি এই বসন্তে এত উদাসীন কেন বা তার মনে এত দুঃখ কেন।  কবিভক্ত এই বসন্তে উদাসীন থাকা বা এই ঋতুর রাজকে উপেক্ষা করার ব্যাখা চাইলেন কবির কাছে।

এরপরের চরণে কবি তার কাছে আসেন এবং বলেছেন যে , কুহেলী উত্তরি মানে হচ্ছে কুয়াশার চাদর তলে মাঘের সন্ন্যসি। এখানে কবি মাঘের সন্ন্যাসী বলতে শীতকে বুঝিয়েছেন। কারন আমরা জানি মাঘ মাসে সবথেকে বেশি শীত থাকে।

কবি এখানে কুয়াশার চাদরে মাঘের সন্ন্যাসী বা শীত আসে এটা বুঝাতে চেয়েছেন।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় শেষ চরণে কবি এখানে পুষ্প শূন্য দিগন্তের পথের রিক্ত হস্তে বলতে বেশ কিছু বিষয় বোঝাতে চেয়েছেন। কবি শেষে শীতকালকে বাঘের সন্ন্যাসী বলেছেন।

আর শেষ চরণের ব্যাখ্যা করলে পাওয়া যায় এখানে কবি শীতকালকে বসন্তকালের বিপরীত হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। বসন্ত কালে যেমন সুন্দর সুন্দর গাছে ফুল হয় নতুন পাতা জন্ম হয় কিন্তু যখন শীতকাল আসে তখন এই সুন্দর ফুল এবং পাতাগুলো সব গাছ থেকে ঝরে যায়।

এই কারণে কবি এখানে গিয়েছে চলিয়া ধীরে পুষ্প শূন্য দিগন্তের পথে উল্লেখ করেছেন। সর্বশেষ চরণে কবি তাহরেই পড়ে মনে ভুলতে পারিনা কোন ভাবে এটা বলতে এখানে বসন্তকে ভুলতে না পারার কথা বলেছেন।

কারণ এই বসন্তে ফুলে ফুলে সজ্জিত হয় আমাদের প্রকৃতি এবং কবে বসন্তের দিনে অনেক গান রচনা করে। কিন্তু এবার কবির মনে এ সমস্ত কোন কিছুরই ছায়া ফুটে ওঠে না।

কবি এই বসন্তে অনেক আবেগে ছিলেন এবং অনেক কষ্টে ছিলেন । সমস্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ফল ফুল কোনোটিই কবির মনে জায়গা করে নিতে পারে নাই।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতার মূলভাব

যেকোনো গদ্য কিংবা পদ্য থেকে সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য সেটার মূলভাব ভালো মতো জানাটা অত্যন্ত জরুরী। তো তাহারেই পড়ে মনে কবিতার মূলভাব ভালো মতো জানা থাকলে এখান থেকে আশা প্রত্যেকটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর খুব সহজেই দেওয়া যাবে।

আপনাদের জন্য নিচে একদম সহজ ভাষায় এই তাহারেই পড়ে মনে কবিতার মূলভাবটি বিশ্লেষণ করা হবে:

মূলভাব: তাহারেই পরে মনে কবিতাটি লিখেছেন কবি সুফিয়া কামাল । এই কবিতাটি লেখার পিছনে অনেক বড় একটি কারণ রয়েছে।

১৯৩২ সালে সুফিয়া কামাল এর প্রথম স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের হঠাৎ মৃত্যু হয়ে যায়। এই মৃত্যুতে কবি সুফিয়া কামাল অনেক বেশি ভেঙ্গে পড়ে।

যখন কবির স্বামী বেঁচে ছিল তখন তিনি বসন্তকালে অনেক বেশি মজা করতেন এবং তার মন মেজাজ উৎফুল্ল ছিল। আগের বসন্তকাল গুলোতে কবি অনেক কবিতা গান এবং বিভিন্ন গল্প রচনা করতেন।

কিন্তু তার স্বামীর মারা যাওয়ার ফলে তার মনে যে আঘাত হয়েছে এই আঘাতের কারণে কবি এখন এই বসন্তকালে আর কোন কিছুর দিকে মন দিতে পারছেন না।

কবি সুফিয়া কামাল একদম উদাসীন হয়ে গেছে এবং কবি তার ভক্তদের কথাও তিনি আর মাথায় নিচ্ছেন না। এই বিষয়গুলোর কারণেই এখানে কবিতার নাম দেওয়া হয়েছে তাহারেই পরে মনে

তাহারেই বলতে এখানে কবি তার মৃত স্বামীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। অর্থাৎ তার স্বামীকে তার বারবার মনে পড়ে জন্য তিনি এখন এই প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগে মন দিতে পারছেন না।

যদিও এই তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটি একটি সংলাপ নির্ভর কবিতা কিন্তু এর মধ্যে আরও একটি বিশেষ লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটা নাটকীয়তা।

কবিতার মাধ্যমে কবি সুফিয়া কামাল তার আবেগ গুলোকে খুব ভালোভাবে প্রকাশ করেছেন এই বসন্তকালের ব্যাখ্যা দিয়ে। কবিতাটি সংলাপ নির্ভর হয়েছে, এখানে সংলাপ এর মধ্যে একটি উক্তি দিয়েছেন কবি ভক্ত এবং আরেকটি উক্তি দিয়েছেন কবি নিজেই।

কবি ভক্ত কবি কে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন, যে কবি বসন্তকাল আসার পরও কেন এত মন খারাপ হয়ে আছে এবং কেন তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন না। কবি ভক্ত দেখেছেন যে আগের বসন্তকাল গুলোতে কবি অনেক খুশি ছিল এবং এই কালে তিনি বেশি বেশি গান রচনা করতেন এবং নিজেও গান গাইতেন।

পড়ুনঃ কোষ ও এর গঠন MCQ | HSC biology 1st paper chapter 1 mcq

কিন্তু এইবার বসন্ত কাল আসার পরেও কবির মধ্যে কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় না কবি সুফিয়া কলামল আগের মতই মন ভার করেছিলেন। এর কারণ হচ্ছে তার স্বামীর আকস্মিক মৃত্যু । এই কারণ থেকেই তিনি তাহারেই পরে মনে কবিতাটি রচনা করেছিলেন।

আশা করি আপনারা সবাই তাহারেই পড়ে মনে কবিতার মূলভাব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জেনে গেছেন।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটি নাটকীয় গুণসম্পন্ন ব্যাখ্যা কর

তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটি কবি রচনা করেছিলেন তার আবেগ থেকে। কোভির স্বামীর মৃত্যুর পর অনেক ভেঙ্গে পড়েছিলেন এবং এটা দেখে কবি ভক্ত নিজেও চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন।

এই কারণে কবিকে কবি ভক্ত বিভিন্ন প্রশ্ন করেছিলেন। কবি সুফিয়া কামাল ও এই প্রশ্নগুলোর জবাব দিয়েছিলেন অনেক উদাসীন মনে। যদিও কবি ভক্ত এবং কবির কথোপকথন গুলোর উপর ভিত্তি করে এটাকে সংলাপ নির্ভর কবিতা বলা যেতে পারে।

কিন্তু এই তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটিতে নাটকীয় বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। এর কারণ হচ্ছে এই কবিতায় কবির গান গাওয়া এবং কাব্য রচনা গুলোর কথা উল্লেখ আছে।

এছাড়া তিনি যে আগের বসন্ত গুলোতে এত খুশি ছিলেন কিন্তু এই বসন্ত তার পুরোপুরি পরিবর্তন হয়েছে সেটার একটা নাটকীয়তা এখানে লক্ষ্য করা যায়।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

নিচে এখন পরীক্ষায় আসার মতো বেশকিছু তাহারেই পড়ে মনে কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর তুলে ধরা হলোঃ

তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কবির কার কথা মনে পড়ে?

এখানে তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কোভিদ স্বামীর কথা মনে পড়ার বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়। এর কারণ হচ্ছে স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের হঠাৎ মৃত্যুর শোকের যন্ত্রণা থেকেই সুফিয়া কামাল এই কবিতাটি রচনা করেছিলেন।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটি প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?

এই সুফিয়া কামালের রচিত তাহারেই পরে মনে কবিতাটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়েছিল মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকায়।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটি কত সালে প্রকাশিত হয়?

এই তাহারেই পরে মনে কবিতাটি লিখেছিলেন সুফিয়া কামাল আর এই কবিতাটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত?

বিভিন্ন কবিতা বিভিন্ন ধরনের ছন্দে রচনা করা হয়ে থাকে। কিন্তু খুবই সুফিয়া কামাল এই তাহারেই পরে মনে কবিতাটি রচনা করেছিলেন অক্ষরবৃত্ত ছন্দ। এই কবিতায় পূর্ণপর্ব মোট আট মাত্রা এবং অপূর্ণ পর্ব মোট দশ মাত্রা।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কবি কার সাথে অভিমান করেছেন?

তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কবি সুফিয়া কামাল বসন্তের সাথে অভিমান করেছেন।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতার স্তবক কয়টি?

তাহারেই পরে মনে কবিতার মোট স্তবক সংখ্যা হচ্ছে পাঁচটি। এছাড়াও এই কবিতায় চরন বা পংক্তি রয়েছে মোট 30 টি।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতার মূল সুর কি?

তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটি সংলাপ নির্ভর। তবে এখানে নাটকীয়তাও লক্ষ্য করা যায়।

পরিশেষে

আজকের এই পোস্টে আমরা তাহারেই পড়ে মনে কবিতা সম্পর্কে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এবং পরীক্ষায় আসার মত টপিক নিয়ে আলোচনা করেছি। এখানে আপনাদের সাথে তাহারেই পড়ে মনে কবিতার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে দেওয়া হয়েছে এবং এই তাহারেই পড়ে মনে কবিতার মূলভাবটিও ভালোমতো বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আশা করি এই পোস্টটি পড়লে তাহারেই পড়ে মনে কবিতা থেকে আসা যে কোন সৃজনশীল প্রশ্ন এর গ এবং ঘ এর উত্তরগুলো সঠিকভাবে খুব সুন্দর করে দিতে পারবেন।

এরপরও যদি কবিতাটি সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা থাকে কিংবা আরো কোন কিছু জানতে চান তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে আমাদেরকে জানিয়ে দিবেন।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

We are sorry that this post was not useful for you!

Let us improve this post!

Tell us how we can improve this post?

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *