ডিজিটাল প্রযুক্তি ৭ম শ্রেণি সেশন ৪ সমাধান (অভিজ্ঞতা ১)

ডিজিটাল প্রযুক্তি ৭ম শ্রেণি সেশন ৪ সমাধান (অভিজ্ঞতা ১)

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকের পোস্ট এ তোমাদের সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তি ৭ম শ্রেণী সেশন ৪ সমাধান নিয়ে আলোচনা করব। তোমাদের এই বইয়ে মূলত বেশ কয়েকটি অভিজ্ঞতা এবং সেশন দেওয়া হয়েছে। এই সেশনগুলোতে যে বাড়ির কাজগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো মূলত সমাধান করতে হয়।

তো তোমাদের ডিজিটাল প্রযুক্তি বইয়ের অভিজ্ঞতা ১ এর মধ্যে যে ৪ নম্বর সেশনটি রয়েছে সেটির সমাধান আজকের পোস্টে তুলে ধরা হবে। তাই যদি তোমরা এই ডিজিটাল প্রযুক্তি ৭ম শ্রেণী সেশন ৪ সমাধান জানতে চাও তাহলে পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়।

ডিজিটাল প্রযুক্তি ৭ম শ্রেণি সেশন ৪ সমাধান (অভিজ্ঞতা ১)

তোমাদের বইয়ে এই ৪ নম্বর শেষণের মধ্যে মূলত একটি গুরুত্বপূর্ণ বাড়ির কাজ দেওয়া হয়েছে। এই বাড়ির কাজটি তোমাদেরকে বাড়ি থেকে করে নিয়ে যেতে হবে।

এখানে তোমাদেরকে তোমাদের এলাকার বিভিন্ন সমস্যা খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে এবং সেগুলো সমাধান সম্পর্কে নিজেদেরকেই ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে। তো তোমরা যারা নিজেরা গ্রামের সমস্যা এবং সমাধান বের করতে পারো নাই তোমাদের জন্য নিচে এই বাড়ির কাজটি সমাধান করে দেয়া হলো।

নিচে আমরা যেভাবে ছক আকারে প্রথমে আমাদের সমস্যা পয়েন্ট তুলে ধরেছি এবং তারপরে সমাধানের জন্য যে তথ্য খুঁজে পেলাম সেটা তুলে ধরেছি এভাবে তোমাদের কেও সমাধান করতে হবে ।

‘আমাদের সমস্যা : নদীভাঙন
সমাধানের জন্য যে তথ্য খুযে পেলাম : আমাদের এই এলাকাটি অনেক প্রত্যন্ত একটি এলাকা। যেহেতু বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ এই কারণে আমাদের গ্রামেও বেশ কিছু ছোট ছোট খাল বিল রয়েছে। তবে এই খাল বিলগুলো বিভিন্ন নদীর সাথে সংযুক্ত হওয়ার কারণে বর্ষাকালে খাল বিল গুলো পানিতে ভরে যায় এবং বিভিন্ন সময় রাস্তাতেও পানি উঠে যায়।

এই রাস্তায় পানি ওঠার কারণে রাস্তা গুলো অনেক সময় ভেঙে যায় যার কারণে পরবর্তীতে সেখান দিয়ে চলাফেরা করতে এলাকার মানুষের প্রচুর পরিমাণে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। রাস্তা ভাঙ্গার পাশাপাশি এই নদী ভাঙ্গনের কারণে আমাদের এলাকার অনেক ঘরবাড়ি ও নদীর সাথে মিশে যায়।

এই সমস্যা সমাধান করতে আমাদেরকে বন্যা হওয়ার আগে থেকেই বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি সেরে ফেলতে হবে। যদি আমরা সঠিকভাবে পদক্ষেপ নেই তাহলে সমস্যাটি প্রতিরোধ করা অনেকটাই সম্ভব হবে।

আমরা যদি আমাদের এলাকার রাস্তাগুলো ভালোভাবে বেঁধে নেই এবং বাঁধ নির্মাণ করি তাহলে পানির স্রোত অনেকটাই কমিয়ে আনা যাবে। কোনভাবে এই পানির স্রোত কে কমানো গেলে মাটি ভাঙ্গনের পরিমাণ অনেক কমে আসবে।

এছাড়াও আমাদের রাস্তাঘাটে প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করতে হবে যেগুলোর শিকড়ের মাধ্যমে মাটি খুব ভালোভাবে আটকে থাকতে পারবে। কোনভাবেই মাটি ধষে যেতে যাওয়া যাবে না। এভাবে প্রতিটি পদক্ষেপ সঠিকভাবে গ্রহণ করতে পারলে আমাদের গ্রামের নদী ভাঙ্গনের সমস্যা অনেকটাই লাঘব পাবে।

‘আমাদের সমস্যা : বন্যা
সমাধানের জন্য যে তথ্য খুযে পেলাম : প্রতি বছর এই বর্ষাকালে আমাদের গ্রামে বন্যার সমস্যাটি প্রবল আকার ধারণ করে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে আমাদের এলাকাটি বেশ নিচু একটি এলাকা। বন্যার সমস্যার কারণে প্রতিবছর এখানে কৃষকদের অনেক আবাদি জমির ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়।

এই বন্যার সমস্যাটি সমাধান করার জন্য আমাদের এলাকার ছোট ছোট খাল বিল গুলো ভালোভাবে খনন করতে হবে যেন পানি গুলো খুব সহজেই চলে যেতে পারে। এছাড়াও এখানে বেশ কিছু ব্রিজ এবং কালভার্ট নির্মাণ করার সুযোগ রয়েছে।

বন্যার সমস্যাটি হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে বৃষ্টিতে হওয়া পানিগুলো ভালোভাবে আমাদের এলাকা থেকে বের হয়ে যেতে পারে না। এই পানি গুলোকে বের করে দেওয়ার জন্য পানির রাস্তাটিকে খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে রাখতে হবে।

এছাড়াও বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদেরকে আগে থেকেই খুব ভালোভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় মাটি কেটে উঁচু জায়গা নির্মাণ করতে হবে যেখানে বন্যার সময় গিয়ে মানুষজন আশ্রয় নিতে পারবে। গবাদি পশুগুলো সংরক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।

এলাকা থেকে পানি গুলো যাওয়ার পথে যেখানে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে সেখানে ব্রিজ নির্মাণ করে পানি গুলো চলে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। যেহেতু বন্যা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাই এখান থেকে সম্পূর্ণরূপে নিরাশন পাওয়া যাবে না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ যতটুকু করা সম্ভব সেভাবেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।

আমাদের সমস্যা : বাল্যবিবাহ
সমাধানের জন্য যে তথ্য খুযে পেলাম : আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটা গ্রামে এই বাল্যবিবাহ সমস্যাটি অনেক পুরনো। গ্রামের প্রতিটা মেয়ের বাবা মনে করে তাদের মেয়েকে অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়াই উচিত। কিন্তু এই বাল্যবিবাহ দেওয়ার পরবর্তী সমস্যাগুলো সম্পর্কে তারা অবগত নয়।

বাল্য বিবাহের কারণে পরবর্তীতে সেই মেয়েটির অনেক ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা যায়। অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়ার ফলে সে ভালোভাবে বুঝে উঠতে পারে না তার পরবর্তী পদক্ষেপ কি হওয়া উচিত। এছাড়াও বাল্যবিবাহ দেওয়ার ফলে খুব তাড়াতাড়ি সে সন্তান জন্ম দেয়।

এভাবে সে নিজেই একজন বালিকা তার ওপরে তারও একটি ছোট সন্তান থাকে। যার ফলে মেয়েটি বুঝতে পারেনা যে তারা এখন কি করা উচিত। এই বাল্য বিবাহ দেওয়ার প্রধান সমস্যা হচ্ছে বাল্যবিবাহ দেওয়ার পরে সেই মেয়েটির পড়ালেখা আর সম্ভাবনা।

আর এর ফলে আমাদের দেশে নারী শিক্ষার হার অনেকটা কমে যাচ্ছে । প্রবাদ আছে যে দেশের নারী যত বেশি শিক্ষিত সে দেশ তত বেশি উন্নত হবে। যদি নারী ভালোভাবে শিক্ষিত না হয় তাহলে তারা তার সন্তান কেও ভালোভাবে শিক্ষা দান করতে পারবে না।

গ্রাম অঞ্চলে বাল্যবিবাহ সমস্যা সমাধান করতে আমাদের উচিত হবে প্রতিটা গ্রামে গিয়ে বাল্যবিবাহ পরবর্তী সমস্যা গুলো সম্পর্কে লোকজনকে অবগত করা। বিশেষ করে প্রতিটা মেয়ের মা এবং বাবাকে এই বিষয়টি ভালোভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে।

এছাড়াও প্রতিটা মেয়েকেও এই বিষয়টি ভালোভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে যে বাল্যবিবাহ হয়ে গেলে তাদের পরবর্তীতে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিবে । এমনকি দেশের আইন অনুযায়ী তাদের প্রতি ব্যবস্থা নিতে হবে যারা বাল্যবিবাহের পক্ষে কাজ করে থাকে।

আমাদের সমস্যা: নিরক্ষরতা
সমাধানের জন্য যা খুঁজে পেলাম: দেশের বেশিরভাগ গ্রাম অঞ্চলে এই নিরক্ষরতা সমস্যাটি রয়েছে। যদিও আস্তে আস্তে এই সমস্যাটি সমাধান পাচ্ছে কিন্তু এখনো বাংলাদেশের অনেক গ্রাম রয়েছে যে গ্রামে অনেক মানুষই অশিক্ষিত রয়েছে । শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, যদি এই শিক্ষাই মানুষ ভালোভাবে শিখতে না পারে তাহলে এই দেশ বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারবে না ।

ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা তাদের পড়াশুনা বাদ দিয়ে বর্তমানে অনেক ধরনের কাজে লেগে পড়েছে তাদের দারিদ্রতার কারণে। আর এরই ফলে গ্রামগঞ্জে নিরক্ষরতার হার বেড়েই চলেছে। যদি প্রতিটা গ্রামে আমরা এই নিরক্ষরতা সমস্যাটি সমাধান করতে পারি তাহলে এই দেশ ভবিষ্যতে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

সমস্যাটি সমাধান করার জন্য আমাদের পক্ষে যতটা সম্ভব পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদেরকে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তাদেরকে শিক্ষার গুরুত্বটা বোঝাতে হবে । যদিও বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার একদম ফ্রিতে করে দিয়েছে এরপরেও অনেক বাবা মা তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠায় না ।

এই সকল বাবা-মার কাছে গিয়ে ভালোভাবে শিক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে হবে । তাছাড়া গ্রামের প্রতিটা ছেলে মেয়ে ভালোভাবে পড়াশোনা করতেছে কিনা সেদিকেও আমাদের বিশেষভাবে নজরদারি করতে হবে ।

শেষকথা

উপরে আমরা তোমাদেরকে সুন্দরভাবে বেশ কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি ৭ম শ্রেণি সেশন ৪ সমাধান করে দিয়েছি । যদিও এই কাজটি ছিল তোমাদের নিজের কিন্তু তোমরা যেন ভালভাবে বিষয়টি বুঝতে পারো এরই উদ্দেশ্যে সমাধান করে দেওয়া।

এখানে আমরা যে সমস্যাগুলো তুলে ধরেছি এই সমস্যাগুলোই যে তোমাদেরকে বলতে হবে এমন কোন কথা নয় । তোমরা নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এটা বের করবে যে তোমাদের গ্রামে কি কি সমস্যা আছে এবং এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কি কি করা যেতে পারে ।

পোস্টটি পুরোপুরি পারার পরেও যদি ডিজিটাল প্রযুক্তি ৭ম শ্রেণী সেশন ৪ সমাধান নিয়ে তোমাদের মনে আর কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাবা।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *