যোহরের নামাজের নিয়ম, রাকাত ও সময় সহ যাবতীয় আলোচনা

যোহরের নামাজ কয় রাকাত ও কি কি , সময় ও পড়ার নিয়ম

আসসালামু আলাইকুম, যদি আপনি যোহরের নামাজ কয় রাকাত ও কি কি এবং এই যোহরের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানতে চান তাহলে আজকের এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

Table of Contents

ইসলাম ধর্মের মানুষ যদি আপনি হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার ওপর আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নামাজকে ফরজ করে দেওয়া হয়েছে। যদি আপনি নামাজ না পড়েন তাহলে অবশ্যই আপনাকে কাফের হিসেবে গণ্য করা হবে।

আর এই নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই পাঁচটি ওয়াক্ত নামাজ সঠিকভাবে আদায় করতে হবে। আর এই নামাজগুলো ঠিকভাবে আদায় করার জন্য প্রতিটি নামাজের নিয়ম এবং রাকাত গুলো সম্পর্কে যথেষ্ট পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে।

যাই হোক তাহলে চলুন এখন আমরা এই সুন্দর পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদেরকে জোহরের নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করি।

যোহরের নামাজ কয় রাকাত?

যে নামাজেই আদায় করতে চান না কেন অবশ্যই সেই নামাজ কত রাকাত সেটা কিন্তু আগে বুঝতে হবে। যদি আপনি নামাজের রাকাত সংখ্যা সম্পর্কে ঠিকমতো অবগত না থাকেন তাহলে নামাজ কখনই পড়তে পারবেন না।

এছাড়াও যদি আপনি ভুল রাকাতের নামাজ পড়ে থাকেন তাহলে কিন্তু সেই নামাজ আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক কম।

তো বন্ধুরা খুব ভালোভাবে বলতে গেলে এটা বলতে পারবেন যে কোন নামাজের সংখ্যা শুধুমাত্র সেই ওয়াক্তের ফরজ নামাজের রাকাত সংখ্যাটি। যেহেতু জোহরের নামাজের মধ্যে ফরজ নামাজ রয়েছে চার রাকাত। সুতরাং আমরা চার কেই যোহরের নামাজের রাকাত সংখ্যা হিসেবে গণ্য করতে পারি।

তবে হ্যাঁ যদি আপনি মোট হিসাব করতে চান তাহলে এখানে জোহরের নামাজ হচ্ছে মোট ১২ রাকাত। বিষয়টি অবশ্যই আপনার মাথায় রাখতে হবে এবং ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে।

যোহরের নামাজ কয় রাকাত ও কি কি

যদিও আমরা আপনাদেরকে উপরে এটাই বুঝিয়ে দিয়েছি যে যোহরের নামাজ কয় রাকাত। কিন্তু এই জোহরের নামাজের রাকাত গুলো কি কি সেটা কিন্তু এখনো বোঝানো হয়নি।

তাহলে এখন নিচে আপনাদের জন্য সুন্দরভাবে এই জোহরের নামাজ কয় রাকাত ও কি কি সেটা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:

প্রথমে সুন্নত: মনে রাখবেন জোহরের নামাজ পরিপূর্ণভাবে আদায় করার জন্য প্রথমে একটি সুন্নত নামাজ আদায় করে নিতে হয়। এই জোহরের প্রথম সুন্নত নামাজটি মোহাম্মদ সাঃ এর সহিহ হাদিস থেকে পাওয়া গিয়েছে এই কারণে নামাজটি ত্যাগ করা উচিত নয়।

তো আপনাকে প্রথমে এখানে ৪ রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করতে হবে যেটাকে আমরা যোহরের নামাজের শুরুর চার রাকাত সুন্নত নামাজ বলতে পারি।

তারপর ফরজ: চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করার পরে যোহরের নামাজের মূল নামাজটি আদায় করতে হবে এই সময়। এই ফরজ নামাজটি প্রত্যেকের উচিত হবে মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে আদায় করা।

তবে কোনো কারণে যদি মসজিদে যেতে না পারেন তাহলে অবশ্যই বাড়িতে একা একা এই সময়ে ফরজ ৪ রাকাত জোহরের নামাজ আদায় করতে হবে। তো আমরা এখানে পেলাম প্রথমে ৪ রাকাত যোহরের সুন্নত এবং তারপর চার রাকাত যোহরের ফরজ নামাজ।

তাহলে এখানে নামাজের শুরুতেই চার রাকাত সুন্নত এবং চার রাকাত ফরজ মিলে হয়ে গেল মোট ৮ রাকাত জোহরের নামাজ।

আবার সুন্নত: প্রথমে সুন্নত এবং ফরজ নামাজ মিলে মোট আট রাকাত জোহরের নামাজ আদায় করা হয়ে যাওয়ার পর এখানে আবার একা একা একটি সুন্নত নামাজ আদায় করতে হবে।

এখানে আপনাদেরকে মোট দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করতে হবে একা একা । মনে রাখবেন ফরজ চার রাকাত নামাজ আদায় করার পরে এই দুই রাকাত সুন্নত নামাজটি কোনভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না।

নফল: জোহরের নামাজ এর শেষে একটি নফল নামাজ রয়েছে যেটা কেউ চাইলে পড়তে পারেন আবার না পড়লেও কোন সমস্যা হয় না। তবে নামাজের শেষে নফল নামাজগুলো পড়া প্রত্যেকের জন্যই উচিত।

শেষে এখানে আপনাকে মোট দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে নিতে হবে। তবে হ্যাঁ যদি আপনার সময়ের স্বল্পতা থাকে অথবা কোন ব্যস্ততা থাকে তাহলে চাইলে এই নামাজটি বাদ দিয়েও আপনি জোহরের নামাজ শেষ করতে পারেন।

তাহলে আগে আমরা প্রথমে চার রাকাত সুন্নত এবং তারপর চার রাকাত ফরজ এবং তারপর দুই রাকাত সুন্নত মোট ১০ রাকাত নামাজ পেয়েছিলাম । পরে আবার যদি আমরা দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করি তাহলে এখানে মোট 12 রাকাত নামাজ আদায় করা হয়ে যাচ্ছে।

আশা করি আপনারা এই জোহরের নামাজ কয় রাকাত ও কি কি সেটা পরিষ্কারভাবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব সুন্দর ভাবে বুঝে গেছেন।

যোহরের কাজা নামাজ কত রাকাত

যদিও উপরে আমরা জোহরের নামাজ কয় রাকাত ও কি কি সেগুলো বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে দিয়েছি কিন্তু এর পরেও অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে যে এই জোহরের কাজা নামাজ কত রাকাত।

মনে রাখবেন কোন নামাজই নিজে ইচ্ছাকৃতভাবে কাজা করবেন না । যদি আপনার খুব বেশি সমস্যা হয়ে থাকে বা খুব বেশি বিপদে পড়েন তাহলে আপনি নামাজ কাজা করতে পারেন তবে অবশ্যই সেই কারণটি যথার্থ হতে হবে।

তো এখানে যোহরের নামাজ যেহেতু দিনের মধ্যখানে আর এই দিনের মাঝখানে মানুষ বেশি কাজ কর্মে ব্যস্ত থাকে । এই কারণে আমাদের নামাজটি কাজা হয়ে যেতে পারে যে কোন সময়।

কিন্তু এই জোহরের কাজা নামাজ কত রাকাত এটি যদি আপনি জেনে রাখতে পারেন তাহলে পরবর্তীতে খুব সহজে নামাজটা আদায় করে নিতে পারবেন।

আপনাদের জন্য এখানে বলে রাখি যে কোন নামাজের কাজা রাকাত হচ্ছে সেই নামাজের শুধুমাত্র ফরজ নামাজের রাকাত টুকু। সুতরাং যেহেতু জোহরের নামাজের ফরজ নামাজ এর রাকাত সংখ্যা হল চার। এই কারণে যোহরের নামাজের কাজা ও হবে চার রাকাত ।

তো যদি আপনাদের কোন যথার্থ কারণে যোহরের নামাজ মিস হয়ে যায় । তাহলে পরবর্তী নামাজের রাকাতের সময় এই যোহরের নামাজের কাজা রাকাত আদায় করে নিলে ইনশাআল্লাহ হয়ে যাবে।

যোহরের নামাজের নিয়ম

প্রতিটি নামাজ আদায় করতে হলে অবশ্যই সেই নামাজের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে প্রত্যেকেরই অবগত থাকতে হবে । যদি কোন নামাজের নিয়ম সম্পর্কে আপনি না বুঝে থাকেন তাহলে কখনোই নামাজটি আদায় করতে সক্ষম হবেন না।

তো এই কারণে নিচে আপনাদের জন্য সুন্দর ভাবে সহজ ভাষায় এই জোহরের নামাজের নিয়ম টি বিস্তারিতভাবে বু দেওয়া হলো।

আমরা প্রতিটি নামাজ যেভাবে আদায় করি ঠিক সেভাবেই যোহরের নামাজ ও আপনারা আদায় করতে পারবেন। কোন আলাদা নামাজের আলাদা নিয়ম নেই শুধুমাত্র বেতের নামাজ ছাড়া। এরপরেও নিচে এক এক করে নামাজটির নিয়ম সম্পর্কে তুলে ধরা হলো:

জোহরের প্রথম চার রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ম

♦ প্রথমেই অজু করে এসে জায়নামাজে দাঁড়াতে হবে এবং মনে মনে যোহরের চার রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত নিয়ে তে হবে।

♦ নিয়ত করা শেষ হয়ে গেলে আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত বাঁধতে হবে।

♦ দুই হাত বাঁধা হয়ে যাওয়ার পরে এখানে আপনাকে নামাজে পাঠ করা ছানাটি পড়তে হবে।

♦ সুন্দরভাবে ছানা পাঠ করা হয়ে গেলে প্রথমে আপনাকে সুরা ফাতিহাটি পাঠ করতে হবে এবং তারপর কুরআন মাজীদের অন্য যে কোন সূরা তেলাওয়াত করবেন।

♦ সূরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা তেলাওয়াত করা হয়ে গেলে আবার আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে চলে যাবেন এবং সেখানে সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম বলবেন ৩ থেকে পাঁচবার।

♦ রুকুতে পাঠ করার তাসবিহটি শেষ হয়ে গেলে আবার সামি আল্লাহু লিমান হামিদা বলে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবেন এবং মনে মনে বলবেন রাব্বানা লাকালহামদ ।

♦ এরপর আপনারা আবার আল্লাহু আকবার বলে সরাসরি সিজদাতে চলে যাবেন এবং সেখানে সিজদার তাজবিহটি পড়বেন তিন থেকে পাঁচবার।

♦ এরপর আবার আল্লাহু আকবার বলে উঠে বসবেন এবং আবারও আরেকটি সেজদা দিয়ে সেজদার তাজবিহ গুলো পড়তে থাকবেন।

♦ সিজদার তাজবিহ পাঠ করা শেষ হয়ে গেলে এবার আল্লাহু আকবার বলে সরাসরি দাঁড়িয়ে যাবেন এবং প্রথম রাকাতের ন্যায় আবারও হাত বাধবেন।

♦ এবার হাত বাধার পর আবারও সূরা ফাতিহা পাঠ করবেন এবং কুরআন মাজিদের অন্য আরেকটি সূরা তেলাওয়াত করে নিবেন। তারপর আবারও আপনাকে রুকু এবং সেজদা করতে হবে।

♦ কিন্তু এবার দুইটি সেজদা হওয়ার পর আর উঠে দাঁড়ানো যাবে না । অর্থাৎ এখানে দুটি সেজদা শেষ হওয়ার পর বসতে হবে।

♦ বসার পর এখানে আপনার আত্তাহিয়াতু বা তাশাহুদ দোয়াটি পড়বেন। তাশাহুদ পড়ার পর আবার দাঁড়িয়ে যাবেন এবং হাত বেঁধে সূরা ফাতিহা ও আরেকটি সূরা পড়বেন ।

♦ এভাবে সূরা ফাতিহা ও আরেকটি সূরা পাঠ করা হয়ে গেলে পূর্বের রাকাত গুলোর মত করে রুকু এবং সাজদা শেষ করতে হবে ।

♦ রুকু সাজদা শেষ হওয়ার পরে আবারো সরাসরি দাঁড়িয়ে যেতে হবে এবং আগের মতো করে সূরা পাঠ করে রুকু সাজদা করতে হবে।

♦ কিন্তু এখানে মনে রাখতে হবে যখন আপনার মোট আটটি সেজদা শেষ হয়ে যাবে তখন কিন্তু শেষ রাকাতে আর দাঁড়ানো যাবে না সরাসরি বসে যেতে হবে।

♦ এখানে সর্বশেষবার বসে গিয়ে প্রথমে তাশাহুদ পাঠ করবেন এবং তারপর দরুদে ইব্রাহিম পাঠ করবেন এবং শেষে দোয়া মাসুরা পাঠ করতে হবে।

♦ দোয়া মাসুরা পাঠ করা হয়ে গেলে প্রথমে আসসালামু আলাইকুম বলে ডানদিকের কাধের দিকে সালাম দিতে হবে এবং তারপর আবার আসসালামুয়ালাইকুম বলে বাম দিকের কাঁধে সালাম দিতে হবে।

গুরুত্বপূর্ণ: যখন চার রাকাত সুন্নত নামাজ পরবেন শুধুমাত্র তখন শেষের দুই রাকাত এর সময় ও সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর আরেকটি অন্য সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে ।

এভাবে আপনারা জোহরের প্রথম চার রাকাত সুন্নত নামাজটি আদায় করে নিতে পারবেন।

যোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম

চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করার পরে কিন্তু আমাদেরকে আবার চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতে হয় জোহরের ওয়াক্তের সময়।

এরপর আপনাকে আবার জোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতে হবে। এখানে যদি আপনি জামাতের সাথে নামাজ আদায় করেন তাহলে শুধুমাত্র ইমামকে অনুসরণ করে নামাজটা আদায় করলেই হয়ে যাবে।

তবে হ্যাঁ যদি আপনি বাড়িতে একা একা বসে এই চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতে চান। তাহলে উপরে দেখানোর নিয়ম অনুসরণ করে হুবহু একই নিয়মে আপনারা জোহরের ফরজ নামাজটা আদায় করে নিতে পারবেন।

এখানে আরো বলে রাখা ভালো, জোহরের নামাজের সময় ইমাম সাহেব যেহেতু কেরাত গুলো মনে মনে পড়ে এই কারণে আপনাকে অবশ্যই নামাজ আদায় করার সময় রাকাতের মধ্যে থাকা কেরাতগুলো ও ঠিকভাবে পড়তে হবে।

কেরাতগুলো পড়ার পাশাপাশি রুকুতে এবং সেজদাহ এর মধ্যে যে সমস্ত তসবিহ রয়েছে সেগুলোও কিন্তু একদম সঠিকভাবে পাঠ করতে হবে।

আর যদি আপনি কখনো ইমাম হিসেবে কোন মসজিদে গিয়ে জোহরের নামাজ মানুষকে পরান তাহলে কিন্তু নামাজ আদায় করার সময় কেরাত গুলো মনে মনে পড়তে হবে এবং নামাজ পড়াতে হবে।

লক্ষণীয়: এখানে সুন্নত চার রাকাত নামাজ আদায় করার সময় আপনাকে শেষের দুই রাকাতের সময় যখন হাত বাধবেন তখন সূরা ফাতিহা তেলাওয়াত করার পরে অন্য আরও একটি যে কোন সূরা মিলিয়ে পড়তে হয়।

কিন্তু যখন আপনি কোন ফরজ নামাজের চার রাকাত পড়বেন তখন কিন্তু শেষের দুই রাকাতের সময় শুধুমাত্র সূরা ফাতেহা পাঠ করে রুকুতে যেতে হবে। অর্থাৎ যখন যোহরের ফরজ চার রাকাত নামাজ আদায় করা শুরু করবেন তখন শেষের দুই রাকাতে গিয়ে শুধু সূরা ফাতিহা পাঠ করে রুকুতে যাবেন অর্থাৎ সূরা ফাতিহার সাথে আর অন্য কোন সূরা মিলাবেন না।

জোহরের সুন্নত ও নফল নামাজ পড়ার নিয়ম

উপরের লেখাগুলো পড়ার মাধ্যমে আশা করি আপনারা যোহরের সুন্নত চার রাকাত এবং ফরজ চার রাকাত নামাজ পড়ার নিয়মগুলো ভালোভাবেই বুঝে গেছেন।

কিন্তু যোহরের ফরজ নামাজের পরেও যে আরো দুই রাকাত সুন্নত এবং দুই রাকাত নফল নামাজ রয়েছে সেগুলো পড়ার নিয়মও কিন্তু আপনাদেরকে জানতে হবে।

এখানে দুই রাকাত পড়ার আলাদা কোন নিয়ম নেই। উপরে যখন আমরা আপনাদেরকে জোহরের নামাজ পড়ার নিয়ম বুঝিয়ে দিয়েছিলাম । তখন প্রথম দুই রাকাত পড়ার পরে কিন্তু একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠক দিয়ে সেখানে তাশাহুদ পড়ে আবার দাঁড়িয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলাম।

কিন্তু যখন আপনি এখানে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে ধরবেন তখন সেই জায়গায় শুধুমাত্র তাশাহুদ পড়ে দাঁড়িয়ে যাওয়া যাবে না সাথে দরুদে ইব্রাহিম এবং দোয়া মাসুরা পড়ে একবারে সালাম ফেরাতে হবে।

এভাবে আপনারা জোহরের দুই রাকাত সুন্নত এবং দুই রাকাত নফল নামাজ খুব সহজেই সুন্দরভাবে আদায় করে নিতে পারবেন।

জুমার দিন যোহরের নামাজ পড়ার নিয়ম

মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয় এই পবিত্র জুম্মার দিনকে। এই জুমার দিনে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম সব থেকে বেশি খুশি থাকতেন। আর এই দিনে কিন্তু আলাদা একটি জুমার নামাজ রয়েছে।

এই দিনে আমরা যোহরের নামাজ আদায় না করে মসজিদে সবাই মিলে একসাথে জুমার নামাজ আদায় করে থাকি। কিন্তু এখানে জুমার নামাজ আমরা শুধুমাত্র জামাতের সাথে আদায় করা যায়। একা একা কিন্তু জুমার নামাজ আদায় করা যায় না।

কোন কারণে যদি শুক্রবারে জুমার নামাজ মিস হয়ে যায় তাহলে বাড়িতে বসে চাইলে জোহরের নামাজ আদায় করে সেই ওয়াক্ত নামাজ পরিপূর্ণ করে নেওয়া যায় ।

তো আপনাদেরকে এই জুমার দিনে নিজে নিজে বসে জোহরের নামাজ এর আগের নিয়ম অনুসারে সুন্দরভাবে পড়ে নিলেই আশা করি হয়ে যাবে।

যোহরের নামাজের সময়

যোহরের নামাজের সময়

প্রতিটি নামাজ পড়ার সময় অবশ্যই সেই ওয়াক্তের জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পড়ে নেওয়াটাই উত্তম। যদি ওয়াক্ত ব্যতীত অন্য সময় নামাজ আদায় করেন তাহলে সেই নামাজটি আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম ।

যার কারণে যে সমস্ত নামাজ রয়েছে সেই নামাজের সময় গুলো সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জেনে নেওয়া দরকার। চলুন এখন আমরা যোহরের নামাজের সময় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি।

মনে রাখবেন জোহরের নামাজের ওয়াক্ত তখনই শুরু হয় যখন সূর্য একদম মাথার উপর থেকে পশ্চিম দিকে একটু হেলে পড়ে । যেহেতু যখন সূর্য সরাসরি মাথার উপর থাকে তখন নামাজ আদায় করা হারাম এই কারণে যখনই নামাজ আদায় করার হারাম সময়টি চলে যায় তখন থেকেই যোহরের নামাজের সময় বা ওয়াক্ত শুরু হয় ।

এখানে আমরা বাংলাদেশের মধ্যে ১টা ৩০pm এ সাধারণত জোহরের নামাজ আদায় করে থাকি। তবে হ্যাঁ যদি কোনদিন এই সময়ে সূর্য সরাসরি মাথার ওপরে থাকে তাহলে কিন্তু তখন নামাজ আদায় করা যাবেনা।

যার কারণে অবশ্যই যোহরের নামাজ আদায় করার সময় এই বিষয়টি দেখতে হবে যে সূর্য সরাসরি মাথার উপরে আছে নাকি পশ্চিম দিকে একটু হেলে পরেছে ।

যোহরের নামাজের শেষ সময়

উপরের লেখাগুলো পড়ে আশা করি জোহরের নামাজের সময় কখন শুরু হয় সেটা বুঝে গেছেন। কিন্তু এই জোহরের নামাজের শেষ সময় সম্পর্কেও আপনাদেরকে পরিষ্কারভাবে বুঝতে হবে।

কারণ যখনই জোহরের নামাজের শেষ সময়টি অতিক্রম করে যাবে তখনই কিন্তু আর জোহরের নামাজ আদায় করার সময় থাকবে না তখন আসরের নামাজ আদায় করার সময় চলে আসবে ।

জোহরের নামাজ এর শেষ সময় নির্ণয়ের জন্য চমৎকার একটি পদ্ধতি রয়েছে যে পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনি যে কোনদিন এই সময়টি নির্ধারণ করতে পারবেন।

আপনাকে একটি যেকোন সাইজের কাঠি নিতে হবে এবং সূর্যের সামনে মাটিতে সোজা নব্বই ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে কাঠিটি দার করতে হবে। এখানে কাঠিটি দার করালে দেখবেন পূর্বের দিকে একটি ছায়া পড়েছে।

তো এই ছায়াটি থেকেই আপনাকে এখন জোহরের নামাজের শেষ সময়টি নির্ধারণ করতে হবে। এখানে যদি আপনি দেখেন যে কাঠির ছায়াটি কাঠির অরিজিনাল সাইজের থেকে আড়াই গুণ বড় হয়ে গেছে তখনই বুঝবেন যে জোহরের নামাজের ওয়াক্ত শেষ হয়ে গেছে।

তবে অন্যান্য বর্ণনায় পাওয়া যায় যে কাঠির ছায়ার সাইজ দ্বিগুণ হয়ে গেলেও জোহরের নামাজের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়। তবে হ্যাঁ অবশ্যই এই কাঠির ছায়াটি দ্বিগুণ থেকে আড়াই গুণ হওয়ার আগেই জোহরের নামাজ আদায় করে নেওয়া উত্তম।

আজকের যোহরের শেষ সময়

উপরে আমরা যে নিয়ম টি আপনাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছি এই নিয়ম অবলম্বন করে শুধুমাত্র আজকের জোহরের নামাজের শেষ সময় নয় । যেকোনো দিন আপনারা যোহরের নামাজের শেষ সময় নির্ণয় করতে পারবেন।

এখানে অবশ্যই কাঠিটি খুব ভালোভাবে সোজা করে মাটির উপরে দাঁড় করাতে হবে তাহলেই কেবল সঠিকভাবে বিষয়টি নির্ণয় করা সম্ভব হবে।

কিন্তু এর পরেও যদি আপনি আজকের জোহরের শেষ সময় না বুঝে থাকেন তাহলে চাইলে ঘড়ির সময় দেখেও এটিকে বুঝে নিতে পারেন । এছাড়াও গুগলে সার্চ করার মাধ্যমেও কিন্তু আপনি প্রতিটি নামাজের সঠিক সময় আপনার লোকেশন অনুযায়ী দেখতে পারবেন।

যোহরের নামাজের নিয়ত

নামাজের আগে যেহেতু অনেকেই রয়েছে এই নিয়ত করার অভ্যাস এই কারণে বেশিরভাগ মানুষই জোহরের নামাজের নিয়ত খুজে থাকেন।

যদিও মোহাম্মদ সাঃ এর যুগে এই ধরনের মুখে বলা কোন আরবি নিয়ত এর প্রচলন ছিল না । এরপরও আমরা নামাজ আদায় করার আগে এই নিয়ত গুলো পড়ে থাকি। যাইহোক যেহেতু আপনার নিয়ত গুলো খুঁজতেছেন এই কারণে নিচে এই যোহরের নামাজের নিয়ত গুলো এক এক করে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো।

যোহরের চার রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত

যখন আপনারা শুরুতেই এই জোহরের নামাজ আদায় করতে যাবেন। তখন যেহেতু প্রথমে আপনাদেরকে চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করে নিতে হবে এই কারণে প্রথমে আপনাদের সাথে এই যোহরের চার রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত তুলে ধরা হল।

বাংলায়: হে আল্লাহ কেবলামুখী হয়ে আমি জোহরের চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করতেছি আপনার উদ্দেশ্যে আল্লাহু আকবার ।

যোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত

ফরজ নামাজ আদায় করার সময় আমরা অনেকেই নিয়তের সমস্যায় ভুগে থাকি। কিন্তু এই নিয়ত গুলো না জানলেও আপনারা নামাজ কিন্তু কবুল হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

এছাড়া আপনারা চাইলে কিন্তু বাংলাতেও এই নিয়ত গুলো পড়তে পারবেন এক্ষেত্রেও কোন সমস্যা হবে না ইনশাল্লাহ।

যোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত

বাংলায়: এই ইমামের পিছনে আমি কেবলামুখী হয়ে জোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতেছি আল্লাহু আকবার।

যোহরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত

যোহরের কসর নামাজের নিয়ত

কসর নামাজ আদায় করার সময় ও কিন্তু আলাদা একটি নিয়ত পড়তে হয়। যেহেতু জোহরের নামাজ ও অনেক সময় আপনারা কসর হিসেবে আদায় করে থাকেন এই কারণে যোহরের কসর নামাজের নিয়ত ভালোভাবে বুঝতে হবে।

যোহরের কসর নামাজের নিয়ত

যোহরের নামাজের নিষিদ্ধ সময়

যখন আপনাদের সাথে জোহরের নামাজের সময় নিয়ে আলোচনা করেছিলাম তখন কিন্তু একটি নামাজের নিষিদ্ধ সময় সম্পর্কে বলেছিলাম।

এখানে যোহরের নামাজের আগে একটি নিষিদ্ধ নামাজের সময় আছে যেটি সম্পর্কে ভালোভাবে না জানলে যদি আপনি সেই সময় নামাজ আদায় করেন তাহলে কিন্তু আপনার নামাজটি কবুল হবে না।

মনে রাখবেন যখনই সূর্যটি একদম মাথার উপরে চলে আসবে তখনই জোহরের নামাজ পড়া হারাম হয়ে যাবে । এখানে শুধুমাত্র জোহরের নামাজ পড়া হারাম হবে এমনটা নয় । যে কোন নামাজ পড়া এই সময়ে আপনাদের জন্য হারাম হয়ে যায়।

এই কারণে সূর্য যখনই সরাসরি মাথার উপরে আসবে তখনই যোহরের নামাজ আদায় করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়াও অন্যান্য ওয়াক্তের সময় ও আর একটি ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা যাবে না । শুধুমাত্র যখন জোহরে ওয়াক্ত চলবে তখনই আপনারা যোহরের নামাজ আদায় করবেন।

জোহরের নামাজ সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

আমাদের মুসলমানদের মধ্যে প্রতিটি নামাজ আছে এবং প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে অসংখ্য প্রশ্ন এসে থাকে মনের মধ্যে। এই কারণে মানুষ জোহরের নামাজ সম্পর্কিত যে সকল প্রশ্নগুলো গুগলে বা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে থাকে সেগুলো নিচে এক এক করে উল্লেখ করা হলো এবং সাথে সুন্দরভাবে সহজ ভাষায় উত্তর গুলোও যুক্ত করে দেওয়া হলো।

যোহরের নামাজের সময় কতটুকু?

বাংলাদেশ হচ্ছে ৬ ঋতুর দেশ। তবে এখানে প্রধান দুটি কাল রয়েছে সেটা হচ্ছে একটি শীত একটি গরম। আর এই শীত এবং গরমের মধ্যে দিনের দৈর্ঘ্যের কম এবং বেশি হয়ে যায়।

যার কারণে প্রতিটি সময় বা প্রতিটি ঋতুতে এই নামাজের সময় গুলো ও পরিবর্তন হতে থাকে। গ্রীষ্মকালে যেহেতু দিনের দৈর্ঘ্য কিছুটা বড় থাকে এই কারণে এখানে যোহরের নামাজের সময় ও বেশ কিছুটা বেশি হয়ে থাকে ।

আর শীতের দিনে যেহেতু দিনের দৈর্ঘ্য অনেকটা কম হয় এবং তাড়াতাড়ি সূর্য ওঠে এবং তাড়াতাড়ি সূর্য ডুবে যার কারণে এই দিনে জোহরের নামাজের সময় কিছুটা কমে আসে।

যার কারণে জোহরের নামাজের সময় কতটুকু এই প্রশ্নের উত্তর আপনারা সঠিকভাবে পাবেন না। এই প্রশ্নটির উত্তর পেতে গেলে আপনাকে প্রতিনিয়ত জোহরের নামাজের সময় শুরু হওয়া থেকে শেষ পর্যন্ত হিসাব করতে হবে ।

কিন্তু এসব হিসাব না করে আপনারা শুধুমাত্র কাঠি ব্যবহার করে উপরের দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী সুন্দরভাবে জোহরের নামাজের সময় গুলো সম্পর্কে ধারণা রাখবেন। তাহলে এই নামাজটি সঠিক সময় আদায় করতে পারবেন।

যোহরের নামাজ কয় রাকাত কিভাবে পড়তে হয়?

জোহরের নামাজ হচ্ছে মোট ১২ রাকাত। এখানে আপনারা প্রথমে চার রাকাত সুন্নত এবং তারপর চার রাকাত ফরজ আবার দুই রাকাত সুন্নত এবং সর্বশেষে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করার মাধ্যমে জোহরের নামাজ শেষ করতে পারবেন।

এখানে এই নামাজগুলো কিভাবে পড়বেন তার একটি নিয়ম আমরা উপরেই জোহরের নামাজের নিয়ম এর পয়েন্ট এ সুন্দরভাবে বলে দিয়েছি ।

যোহরের নামাজের ওয়াক্ত শেষ কখন?

যখনই দেখবেন সূর্যটি আপনার মাথার উপর থেকে পশ্চিম দিকে একটু বেশি ঢলে পড়েছে তখনই বুঝবেন যে এখন জোহরের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাচ্ছে।

আরো ভালোভাবে যদি বুঝতে চান তাহলে এখানে আপনারা একটি কাঠি নিয়ে সূর্যের সামনে মাটিতে দাঁড় করিয়ে দিবেন। এরপর দেখবেন ওই কাঠির যে ছায়া তৈরি হয়েছে সেই ছায়াটির দৈর্ঘ্য যদি কাঠির আসল ধরবো থেকে দ্বিগুণ হয়ে যায় তাহলে যোহরের নামাজের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাচ্ছে ।

আর যখন দেখবেন কাঠির ছায়াটি আড়াই গুণ বড় হয়ে গেছে তখনই বুঝবেন যে এখন থেকে এখানে জোহরের নামাজের ওয়াক্ত শেষ হয়ে গেল।

যোহরের ওয়াক্ত কখন শুরু হয়?

সূর্য যখন সরাসরি মাথার উপর থাকে তখন কিন্তু জোহরের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয় না, এটা ভালোভাবে মাথায় রাখতে হবে। যখন সূর্য টি মাথার ওপর থেকে পশ্চিমের দিকে কিছুটা সামান্য পরিমাণে ঢেলে পড়ে তখনই সাধারণত যোহরের ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়।

যদি আপনারা সূর্যের বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে না পারেন তাহলে এখানে আরেকটি বিষয় বললে খুব সহজে বুঝতে পারবেন। যোহরের ওয়াক্ত আমাদের দেশে সাধারণত বেলা ১টায় শুরু হয়ে থাকে ।

তবে হ্যাঁ যদি কোনদিন এই বেলা একটার সময় সূর্য সরাসরি মাথার উপর থাকে তাহলে কিন্তু সেই দিন তখন আর জোহরের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে না। এই কারণে জোহরের নামাজ আদায় করার সময় অবশ্যই সময় দেখার পাশাপাশি সূর্যের অবস্থানটিও দেখে নেওয়া উচিত ।

যোহরের কসর নামাজ কত রাকাত?

আমরা এখন আপনাদেরকে এমনভাবে এই কছর নামাজের রাকাত সংখ্যা বুঝিয়ে দেব যাতে করে পরবর্তীতে যে কোন ওয়াক্তের নামাজের কসর কত রাকাত সেটা বুঝতে পারেন।

কসর শব্দের অর্থ হচ্ছে সংক্ষিপ্ত করা। অর্থাৎ কোন একটি ওয়াক্ত নামাজের রাকাতকে সংক্ষিপ্ত করে আদায় করাটাকে মূলত কসর নামাজ আদায় করা বলা হয়।

এখানে বলে রাখা ভালো কচর নামাজ কিন্তু সব সময় একজন ব্যক্তি পড়তে পারবেন না । মূলত একটি দূরত্ব অতিক্রম করার পর যখন একজন মুমিন ব্যক্তি মুসাফির হিসেবে গণ্য হয় তখনই সে কেবল কসর নামাজ আদায় করতে পারবে।

আর কসর নামাজ হচ্ছে কোন ওয়াক্তের নামাজের ফরজ নামাজ কে অর্ধেক করে পড়া। তবে হ্যাঁ এখানে কিন্তু সব ওয়াক্তের নামাজকে আপনি অর্ধেক করে পড়তে পারবেন না।

শুধুমাত্র যে সমস্ত ওয়াক্তের নামাজের মধ্যে ফরজ নামাজের রাকাত সংখ্যা চার রয়েছে শুধুমাত্র সেই ফরজ নামাজটিকে আপনার কসর হিসেবে পড়তে পারবেন যদি আপনি মুসাফির হয়ে থাকেন ।

তো এখানে যেহেতু যোহরের নামাজের মধ্যে ফরজ নামাজটি রয়েছে মোট চার রাকাত এই কারণে আপনারা এটিকে অর্ধেক করে অর্থাৎ দুই রাকাত করে কসর নামাজ আদায় করতে পারবেন।

এ কারণে আমরা বলতে পারি যোহরের কসর নামাজ হচ্ছে দুই রাকাত। যদি আপনি সেই জায়গায় গিয়ে জামাতের সাথে নামাজ আদায় করেন এরপরেও ইমাম সাহেবের সাথে দুই রাকাত নামাজ পড়ার পর আপনি নিজে নিজে সালাম ফিরে নামাজটি শেষ করবেন।

যোহরের নামাজ মোট কয় রাকাত?

জোহরের নামাজ মোট কয় রাকাত এই সম্পর্কে কিন্তু বিস্তারিত আমরা উপরেই আপনাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছি। এখানে জোহরের নামাজ হচ্ছে মোট ১২ রাকাত।

অর্থাৎ প্রথমে চার রাকাত সুন্নত যোগ চার রাকাত ফরজ যোগ দুই রাকাত সুন্নত যোগ দুই রাকাত নফল , অর্থাৎ এখানে সবগুলো যোগ করলে হয় মোট ১২ রাকাত।

তবে হ্যাঁ শুধুমাত্র ফরজ নামাজ টি আদায় করলেই মূলত সেই ওয়াক্ত টি আদায় করা হয়ে যায়। কিন্তু একটি ওয়াক্তের নামাজ পরিপূর্ণভাবে আদায় করতে হলে অবশ্যই এর সাথে থাকা সুন্নত গুলিকেউ আদায় করা দরকার হয়।

তবে চাইলে আপনারা যোহরের নামাজ থেকে সর্বশেষ দুই রাকাত নফল নামাজ টিকে বাদ দিয়ে বাকি নামাজগুলো সুন্দরভাবে আদায় করতে পারেন।

উপসংহার

যোহরের নামাজ আদায় করতে হলে একজন মুসলমানের যে সমস্ত জিনিস জানা প্রয়োজন তার প্রতিটি বিষয়ই আমাদের এই পোষ্টের মধ্যে সুন্দরভাবে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে।

আপনি যদি আজকের এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেলেন তাহলে আশা করব এই জোহরের নামাজ সম্পর্কে আপনার মনে আর কোন ধরনের প্রশ্ন থাকবেন।

এখানে আমরা জোহরের নামাজ কয় রাকাত ও কি কি। এছাড়া যোহরের নামাজ পড়ার নিয়ম সহ এই জোহরের নামাজ কিভাবে পড়বেন বা কোন সময় পড়া যাবে এবং কোন সময় পড়া যাবে না সবগুলোই সুন্দরভাবে বলে দিয়েছি।

পুরো পোস্ট টি পড়ার পরেও যদি জোহরের নামাজ সম্পর্কে আপনার মনে বিন্দু পরিমাণ কোন প্রশ্ন আসে তাহলেও আমাদেরকে কমেন্টে জিজ্ঞেস করবেন । আর হ্যাঁ অবশ্যই প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সঠিকভাবে ও সঠিক সময়ে পড়ার চেষ্টা করবেন ।

একজন মুসলমান এবং কাফের এর মধ্যে পার্থক্য করা হয় কিন্তু এই নামাজ এর মধ্য দিয়ে। যদি নামাজ আদায় না করেন তাহলে আপনি জন্মগত মুসলিম হয়েও কিন্তু একজন মুমিন হতে পারবেন না। যার কারণে অবশ্যই নামাজের প্রতি গুরুত্ব সহকারে খেয়াল রাখতে হবে। আসসালামু আলাইকুম ।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *