দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি লেখার নিয়ম

আপনি যদি দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি লেখা শিখতে চান তাহলে আজকের পোস্ট আপনার জন্য। এই পোস্টে সুন্দরভাবে দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি লেখা দেখিয়ে দেওয়া হবে।

আমরা অনেক সময় বন্ধুদের কাছে চিঠি লিখতে চাই বিভিন্ন কারণে। এছাড়া পরীক্ষার মধ্যেও অনেক সময় এই চিঠি লেখা আসতে পারে। তো যদি আমরা চিঠি লেখা শিখে রাখতে পারি তাহলে যে কোন সময় কাজে লেগে যেতে পারে।

আমরা অনেক সময় ইন্টারনেট এর মধ্যে দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি লিখব কিভাবে সেটা জানতে চাই, চলুন এখন আমরা সেটা বিস্তারিত জেনে আসি।

দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি

এখানে আমরা সুন্দরভাবে একটি জায়গার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি লেখা দেখিয়ে দেবো । কিন্তু আপনি যে জায়গার বর্ণনা দিতে চান অবশ্যই সেই জায়গার সঠিক বর্ণনা দিয়ে তারপর লিখবেন।

নিচে এখন এই দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি টি লিখে দেওয়া হল:

ঠিকানা: ধানমন্ডি ১২০৩, ঢাকা (সঠিকভাবে এখানে ঠিকানাটি লিখতে হবে আপনার)
তারিখ: ৬ই নভেম্বর ২০২৩

প্রিয় বন্ধু, ( এখানে আপনি আপনার ইচ্ছামত যে কোন শব্দ ব্যবহার করে সম্বোধন করতে পারেন)

আসসালামু আলাইকুম বন্ধু আশা করি তুমি অনেক ভালো আছো। আশা করছি তোমার বিগত দিনগুলো অনেক ভালো কেটেছে।

আমিও ভালো আছি। আর তোমার কথা খুব মনে পড়ছিল। অতীতে তোমার সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত আমারে স্পষ্টভাবে মনে আছে। কিন্তু এখন সময়ের স্রোতে এবং পরিস্থিতির কারণে আমরা আলাদা।

অনেকদিন হলো তোমার কথা মনে হচ্ছে এবং তোমার কাছে একটি চিঠি লিখব বলে ভাবছি। কিন্তু এই সময় ও সুযোগ কোনটাই হয়ে উঠছিল না। আজ আমি কিছুটা সময় পেয়েছি তাই তোমার কাছে একটি চিঠি লিখতেছি ।

পড়ুনঃ পাঠাগার স্থাপনের জন্য আবেদন (বিদ্যালয়ে এবং এলাকায়)

আশা করছি তুমি তোমার স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে খুব ভালো আছো এবং ভালোভাবে দিনগুলো কাটাচ্ছো। আমি কিছুদিন আগে আমাদের উত্তরবঙ্গের দর্শনীয় একটি স্থান স্বপ্নপুরী গিয়েছিলাম।

এই কারণে আমি এই স্থানের বর্ণনা দিয়ে তোমাকে একটি চিঠি লিখতে চাচ্ছি। যাতে তুমি এই স্বপ্নপুরী ভ্রমন করতে আসতে পারো।

আমাদের উত্তরবঙ্গের যতগুলো দর্শনীয় স্থান আছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্বপ্নপুরী। এই দর্শনীয় স্থানটি রংপুর বিভাগের দিনাজপুর জেলার মধ্যে নবাবগঞ্জ উপজেলার ভিতরে আফতাব নগরে অবস্থিত।

এই স্থানটি সর্ব প্রথম ১৯৮৯ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল মানুষের বিনোদনের উদ্দেশ্যে। বুঝতেই পারছ স্থানটি অনেক পুরাতন এবং প্রাচীন। সেখানকার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন সাহেব এই স্বপ্নপুরী তৈরি করেছিল সর্বপ্রথম।

স্বপ্নপুরী স্থানটি বিশাল বড় এরিয়ার মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে যেখানে রয়েছে অসংখ্য বিনোদনের জিনিস। তুমি এই স্থানটিতে ঢুকলেই বুঝতে পারবে যে এটি কতটা সুন্দর।

শুধুমাত্র চিঠিতে লিখে এর সৌন্দর্য সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এই স্বপ্নপুরে প্রাচীন বেশ কিছু ঐতিহাসিক শৈল্পিক ভাস্কর্য রয়েছে।

স্বপ্নপুরী তে ঢোকার সময় এর গেইটে তুমি একটি পরীর ভাস্কর্য দেখতে পারবে যেটা দেখতে অসম্ভব সুন্দর। এছাড়াও এর ভিতরে অসম্ভব সুন্দর একটি ডাইনোসরের ও ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে।

তাছাড়া এখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ও একটি সুন্দর ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে যাতে মানুষ এগুলো সম্পর্কে ধারণা পেতে পারে।

এগুলো ছাড়াও এখানে তুমি অসংখ্য বিনোদনের কেন্দ্র পাবে যেগুলো ঘুরে শেষ করতে পারবে না। স্বপ্নপুরীর মধ্যে সবথেকে আকর্ষণীয় একটি বিষয় হচ্ছে এখানে রয়েছে উত্তরবঙ্গের সবথেকে বড় চিড়িয়াখানা।

এই চিড়িয়াখানায় নানান ধরনের পশু পাখি রয়েছে যেগুলো দেখলে যেকেউ মুগ্ধ হতে বাধ্য । এখানে বনের পশুপাখি সহ গ্রাম অঞ্চলের সমস্ত পশু পাখি রয়েছে জীবিত অবস্থায়।

সিংহ হরিণ সহ যত প্রাণী সম্ভব সবগুলোই এখানে রয়েছে। এছাড়াও এখানে অসংখ্য প্রজাতির পাখি রয়েছে যেগুলো তুমি আগে কখনো দেখনি। বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলের প্রাচীন পাখি সহ এখানে রয়েছে বিদেশি পাখি।

এখানে যে সমস্ত পশু এবং পাখি রয়েছে সেগুলো বিভিন্ন এরিয়ার মধ্যে খাঁচায় বন্দি আছে এবং তাদের জন্য আলাদা করে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এই পশু পাখির নামগুলো কি এবং এগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম সহ এগুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ইনফরমেশন গুলো সেই জায়গায় দেওয়া রয়েছে ।

তুমি এই চিড়িয়াখানাটিতে এই সমস্ত পাখি সম্পর্কে জানতে পারবে এবং অনেক জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হবে । চিড়িয়াখানার ভিতরে তুমি বিভিন্ন গাছগুলোর নিচে বসে বিশ্রাম নিতে পারবে।

খুব অল্প টাকায় টিকিট কেটে এই চিড়িয়াখানার ভিতরে ঢুকে তুমি সারাদিন এগুলো দেখে উপভোগ করতে পারবে। এখানে এক্সট্রা রাখার কোন টাকা দেওয়া লাগবে না।

এখানে নাগরদোলা সহ আরো অনেক ধরনের বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে যেগুলোতে তুমি করে অনেক আনন্দ উপভোগ করতে পারে। এর মধ্যে পুকুর রয়েছে যেখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মাছ।

এখানে রয়েছে অসম্ভব সুন্দর অনেকগুলো রেস্ট হাউস যেগুলোতে ঢুকে তুমি রেস্ট নিতে পারবে। তাছাড়া এখানে আরো রেস্ট হাউস নির্মাণের জন্য স্বপ্নপুরীর কাজ চালানোর রয়েছে।

এই এরিয়ার মধ্যে রয়েছে জাদুর আর্ট গ্যালারি যেখানে অনেক অবাক করা বিষয়বস্তু দেখা যায়। আর এই জাদুর আর্ট গ্যালারিটি বানানো হয়েছে মূলত শিশুদেরকে আনন্দ দেওয়ার জন্য।

এছাড়াও এই স্বপ্নপুরীতে রয়েছে অনেক সুন্দর একটি সৌরজগৎ। যেখানে ঢুকলে তুমি সৌরজগতের অসংখ্য বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। এখানে ডিসপ্লের মাধ্যমে সৌরজগতের গ্রহ গুলোর মুভমেন্ট দেখানো সহ বিভিন্ন গ্রহের সাউন্ড গুলো সুন্দরভাবে শোনানো হয়।

এগুলো ছাড়াও এখানে রয়েছে মৎস্য জগত যার ভিতরে রয়েছে শত শত প্রজাতির মাছ। এখানে তোমার বাচ্চাকে নিয়ে গেলে সে অনেক অজানা বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবে।

উত্তরবঙ্গের সব থেকে বড় বিনোদন কেন্দ্রের নাম হচ্ছে এই স্বপ্নপুরী। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এপ্রিল মে মাস পর্যন্ত এই জায়গায় সব থেকে বেশি মানুষ ভ্রমণ করে থাকে।

এখানে মূলত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের কে শিক্ষা সকলের জন্য নিয়ে আসা হয়। তারা এখানে এসে বিভিন্ন বিষয়গুলো দেখে এবং কেনাকাটা করে।

যদি তোমার সময় হয় তাহলে অবশ্যই এই স্বপ্নপুরীতে একবার এসে ভ্রমন করে যাওয়া উচিত।

স্বপ্নপুরীতে এসব বিষয় দেখে উপভোগ করার পাশাপাশি এখানে রয়েছে নানান জিনিসের দোকান। যেখান থেকে তুমি অসংখ্য ভালো ভালো জিনিস ক্রয় করতে পারবে যেগুলো অন্য কোন দোকানে পাওয়া যায় না।

এক কথায় এই স্বপ্নপুরীতে বিনোদনের সবকিছুই রয়েছে। এখানে ঢোকার সাথে সাথে তুমি বুঝতে পারবে যে এর পরিবেশটা কত সুন্দর। এখানে ফাঁকা মাঠের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য ফুলের গাছ।

আর এই গাছগুলো প্রতিদিন ছাঁটাই করা হয়। সুন্দরভাবে এগুলোকে সাজিয়ে রাখা হয়, যাতে ভ্রমণকারীরা এগুলো দেখে আনন্দ নিতে পারে এবং এগুলোতে ছবি তুলতে পারে।

যাই হোক আশা করি তুমি আমার এই চিঠিটি সম্পূর্ণ পড়েছ। আমি চেষ্টা করেছি স্বপ্নপুরীতে আমার দেখা বিষয় গুলো সংক্ষেপে তোমাকে জানিয়ে দিতে । ফ্রী সময় পাইলে অবশ্যই তোমার এখানে আসা উচিত এবং স্বপ্নপুরী ভ্রমন করার উচিত।

আশা করি তুমি সবসময় ভালো থাকবে তোমার সন্তান এবং স্ত্রীকে নিয়ে। আঙ্কেল এবং আন্টিকে আমার সালাম অবশ্যই জানাবে। আমি দোয়া করি তুমি পরিবার নিয়ে অনেক সুখে থাকো।

আর আঙ্কেল আন্টি কে অবশ্যই আমার জন্য দোয়া করতে বলবে । সময় পেলে অবশ্যই আমার এই চিঠি টি পড়ে উত্তরে জানাবে। আমি তোমার চিঠির উত্তরের অপেক্ষায় থাকলাম।

ইতি
তোমার প্রিয় বন্ধু,
মো: একরামুল হসেন

( এখন এখানে ছক করে একটি ডাক টিকেট লিখতে হবে সুন্দর করে, ডাক টিকিটের মধ্যে প্রেরক এর জায়গায় আপনার নিজের ইনফরমেশন গুলো দিতে হবে এবং প্রাপক এর জায়গায় আপনার বন্ধুর ইনফরমেশন গুলো দিতে হবে)

ডাকটিকিট
প্রেরক প্রাপক
 মো: একরামুল হোসেন  মো: আসাদুল আলম
 ঠিকানা; পলাশবাড়ী  ঠিকানা: নারায়নগঞ্জ, ঢাকা
 মোবাইল: ০১৭৩০১৯xxxx  মোবাইল: ০১৬xxxxxxxx

উপরে আমি যেভাবে লিখে দিয়েছি এভাবে আপনারা দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর নিকট চিঠি লিখতে পারবেন। এখানে আপনি যে স্থানটির বর্ণনা দিতে চাচ্ছেন সেই স্থানের বর্ণনাটি সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে ।

যে স্থানের বর্ণনা দিবেন অবশ্যই সংক্ষিপ্তভাবে সেই স্থানের মূল আকর্ষণ বিষয়গুলো চিঠির মধ্যে তুলে ধরার চেষ্টা করবেন। আর হ্যাঁ এখানে তারিখ ঠিক রাখতে হবে এবং বানানগুলো সবসময় শুদ্ধভাবে লিখতে হবে কোন বানান ভুল করা যাবে না ।

পরিশেষে

উপরে আমরা যে চিঠি আপনাদেরকে লিখে দিয়েছি এটি দিয়ে আপনারা পরীক্ষার মধ্যে প্রশ্ন আসলেও সেখানে উত্তর করতে পারবেন।

দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর নিকট চিঠি দেওয়ার সম্পর্কে বিভিন্নভাবে পরীক্ষায় প্রশ্ন আসতে পারে । নিচে বেশ কিছু প্রশ্নের নাম উল্লেখ করা হলো যে প্রশ্নগুলো পরীক্ষায় আসলে আপনারা এই চিঠিটি লিখতে পারবেন।

  • দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি class 6
  • তোমার দেখা একটি দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র লেখ
  • দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর নিকট পত্র
  • দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর নিকট পত্র class 6
  • তোমার দেখা একটি দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দাও

এগুলো ছাড়াও যদি অন্যভাবে কোন স্থানের বর্ণনা দিয়ে চিঠি লিখতে বলা হয় তাহলে উপরে এবং নিচে লেখাগুলো ঠিক রেখে মাঝখানে লেখাগুলো সেই স্থানের বর্ণনা অনুযায়ী লিখতে হবে।

আশা করি দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর নিকট চিঠি লিখতে আর কোন সমস্যা হবেনা। এরপরও যদি আপনার কোন সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করবেন।

Leave a Comment